ভারি বৃষ্টিপাত হলে ঢাকা এবং চট্টগাম শহরে জলাবদ্ধতা এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু প্রবল বর্ষণের কারণে এবার বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহরও জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে গত এক দশক ধরে নগরায়নের যে ধারা চলছে সেখানে জেলা শহরগুলোর প্রতি কোন মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না। সেকারণেই দিনে দিনে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
নোয়াখালীর বসুরহাট একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসবে স্বীকৃত। অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সুযোগ-সুবিধার বিচারে এই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এই শহরের এখন জলাবদ্ধতায় ভূগছে। বিপযর্স্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন।
নোয়াখালীর বাসিন্দা ইকবাল হোসেন জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় মানুষের বাড়িতে পানি ঢুকছে। ফলে অনেকে বাড়িতে রান্না করতে পারছেন না।
এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় সড়ক যোগাযোগ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমও বিঘ্নিত হচ্ছে।
গত ক`দিনের বৃষ্টিতে একই অবস্থা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, কক্সবাজার, বান্দরবান ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন ছোট শহর।
কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিতেই বাংলাদেশের অনেক জেলা শহরে হাঁটু বা কোমর পানি জমে যাচ্ছে।
যশোরের সাংবাদিক সাজেদ রহমান জানান, শহরের অনেক জায়গার বাসিন্দারা বৃষ্টি হলেই আতংকে থাকেন। কারণ জলাবদ্ধতায় মানুষের জীবন অচল হয়ে পড়ে।
যে সব জেলা শহরে জলাবদ্ধতার সমস্যা হচ্ছে সেখানে সমস্যা একই ধরনের। অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর এবং স্থাপনা গড়ে ওঠার কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনার অধ্যাপক সারোয়ার জাহান মনে করেন, নগর পরিকল্পনার যত আলোচনা হচ্ছে তার সবই ঢাকা বা চট্টগ্রাম শহর কেন্দ্রিক। জেলা শহরগুলোতে জনসংখ্যা বাড়লেও সেদিকে পরিকল্পনার কোন নজর নেই।
জেলা শহরগুলোতে যে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ রয়েছে তাদের হাতে তেমন কোন ক্ষমতা নেই বলে অধ্যাপক উল্লেখ বলেন। শুধু শহর পরিচ্ছন্ন রাখা, রাস্তা ঠিক করা এবং রাস্তায় বাতি লাগানোসহ কয়েকটি কাজ নিয়েই পৌরসভাগুলো ব্যস্ত। একটি শহর কিভাবে গড়ে তুলতে হবে সেটি নিয়ে তাদের কোন দক্ষতা নেই।
অধ্যাপক জাহান বলছেন, জেলা শহরগুলোতে পরিকল্পনার কতটা অভাব রয়েছে সেটি বর্ষা আসলেই চোখে পড়ে।
কিন্তু বর্ষাকাল শেষ হওয়ার পর এই দুর্ভোগের কথা স্থানীয় অধিবাসীরা মনে রাখেন না। ফলে অপরিকল্পিত স্থাপনা গড়ে উঠছেই।